
যাকাত ও ফিতরার পার্থক্য
যাকাত ও ফিতরার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য: রমজান মাসে মুসলিমদের অধিক দান ইসলামিক দানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো যাকাত এবং ফিতরা। যদিও এই দুটি দানই মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে এগুলোর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। বিশেষভাবে, যাকাতের বিধান রমজান বা ঈদের সাথে সম্পর্কিত না হলেও, ফিতরা সরাসরি এই দুটি মহিমান্বিত সময়ের সাথে সংযুক্ত।
বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে দেখা যায়, রমজান মাসে যাকাত প্রদানের হার বৃদ্ধি পায়। রমজান মাসে মুসলিমরা অধিক পরিমাণে যাকাত দেন এবং এটি তাদের সম্পদের পরিমাণের উপর নির্ভর করে, অর্থাৎ যত বেশি সম্পদ, তত বেশি যাকাত প্রদান করা হয়। তবে, ফিতরার ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। ফিতরা একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ, যা সঞ্চিত সম্পদের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে না। এক কোটি টাকার মালিক এবং দুই লাখ টাকার মালিক উভয়েই সমান পরিমাণে ফিতরা প্রদান করবেন, এমনটিই জানিয়েছেন ইসলামী গবেষক শরীফ মুহাম্মদ।
শরীফ মুহাম্মদ আরও বলেন, “যাদের যাকাত দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে, তাদের জন্য ফিতরা প্রদান করা বাধ্যতামূলক।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ফিতরা প্রদান রোজার ক্ষেত্রে ছোটখাটো ত্রুটি বা ভুল সংশোধন করার উদ্দেশ্যেও দেওয়া হয়, যেমন রোজা পালনকালে যদি কোনো অশ্লীল কথা বলা হয়ে থাকে, তাহলে ফিতরা দিয়ে তা পরিশুদ্ধ করা যায়।
ফিতরার আরেকটি মূল উদ্দেশ্য হলো ঈদের আগে দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য বা আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা, যাতে তারা ঈদের দিন আনন্দের সাথে উদযাপন করতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে, যাদের যাকাত প্রাপ্য, তারা ফিতরাও প্রাপ্য।
এভাবে, যাকাত ও ফিতরা ইসলামিক দানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলেও, তাদের পরিমাণ, সময় এবং উদ্দেশ্য—সবই আলাদা।