২০২৪ সালে ইউরোপে অবৈধ অভিবাসনের হার ৪০ শতাংশ কমেছে
২০২৪ সালে ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশের ঘটনা ৪০ শতাংশ কমে গেছে, যা এককথায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ‘ফ্রন্টেক্স’ এর সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় এই বছর অবৈধ অভিবাসীদের প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বিশেষ করে, ভূমধ্যসাগর এবং বালকান অঞ্চলের সীমান্তে নতুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে এই হ্রাস সম্ভব হয়েছে।
ফ্রন্টেক্স জানায়, বিভিন্ন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে অভিবাসন সংকটের প্রতি শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে অবৈধ অভিবাসী প্রবাহে কমতি এসেছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর সহযোগিতায় ‘হটস্পট’ বা সংকটপূর্ণ অঞ্চলে নজরদারি এবং সীমান্তে চেকপয়েন্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, যা সীমান্ত নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করেছে। এর ফলে, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা এবং বালকান রুটের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের ঘটনা কমেছে।
এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু সদস্য রাষ্ট্র অভিবাসন ব্যবস্থা আরও কঠোর করতে এবং নিয়মিত ভাবে সীমান্তের দিকে নজরদারি বাড়ানোর জন্য আইনগত সংস্কারও করেছে। এতে, এই বছরের প্রথম দিকেই ইউরোপীয় দেশগুলোতে অবৈধ প্রবেশের হার কমতে শুরু করে এবং তা পুরো বছর ধরে একটি স্থিতিশীল হ্রাসের দিকে এগিয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সাফল্যের পিছনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ফ্রন্টেক্সের কার্যকর কার্যক্রম, এবং তৃতীয় দেশগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী সহযোগিতা একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। এর পাশাপাশি, অভিবাসীদের উদ্ধার এবং সহায়তা প্রদানকারী এনজিওগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার মাধ্যমে সাগরে নিখোঁজ হওয়ার মতো ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।
তবে, একাধিক বিশেষজ্ঞ জানান যে, ইউরোপীয় দেশগুলো অবৈধ অভিবাসনকে পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে না। কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংঘাত, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভিবাসী প্রবাহ চলতে থাকবে। তাই, অভিবাসন পদ্ধতিতে আরও উন্নয়ন এবং নিরাপদ, মানবিক পন্থা অবলম্বন করা জরুরি। এই বছর কমে যাওয়া প্রবাহ সত্ত্বেও, বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য এখনই স্থায়ী সমাধান খোঁজা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অবৈধ অভিবাসীদের জন্য আরও মানবিক এবং নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ, তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে আরও সমন্বয় প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।