
নাটোরে বিষাক্ত কেমিক্যাল ছাড়াই শুঁটকি মাছ উৎপাদন
নাটোরে এখন আর কেমিক্যাল ব্যবহার না করেই শুটকি মাছ উৎপাদন হচ্ছে, যা স্থানীয় জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন হিসেবে দেখা যাচ্ছে। সাধারণত, শুটকি মাছ প্রক্রিয়াজাত করতে কেমিক্যালের ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তবে এই নতুন পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে শুটকি তৈরি করা হচ্ছে, যা মাছের পুষ্টিগুণ বজায় রাখে এবং মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ।
স্থানীয় মাছচাষীরা জানিয়েছেন, শুটকি মাছ প্রক্রিয়াজাত করার জন্য তারা আর কেমিক্যাল ব্যবহার করছেন না, বরং শুধুমাত্র প্রাকৃতিক উপাদান এবং লবণ ব্যবহার করে মাছ শুকিয়ে শুটকি তৈরি করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই পদ্ধতিতে শুটকি তৈরি হওয়ায়, মাছের গুণগত মান আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এতে কোনও ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে এটি শুধু স্বাস্থ্যকরই নয়, পরিবেশবান্ধবও।
নতুন এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত শুটকি মাছ বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে চাহিদা বেড়েছে এবং স্থানীয় মাছচাষিরা লাভবান হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই কেমিক্যাল-মুক্ত শুটকি মাছ শুধু দেশীয় বাজারেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করার সুযোগও তৈরি হচ্ছে। বিশেষত বিদেশে স্বাস্থ্য সচেতন ক্রেতাদের মধ্যে এই ধরনের পণ্য ব্যাপকভাবে চাহিদা পাচ্ছে।
নাটোর জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের বিস্তার ঘটানোর জন্য তারা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদান করছেন। স্থানীয় মাছচাষিদের আরও দক্ষ করে তোলার জন্য নিয়মিত কর্মশালা এবং সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। এর ফলে, স্থানীয় জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে এবং তারা আরও স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণে আগ্রহী হচ্ছেন।
এছাড়া, কেমিক্যাল মুক্ত শুটকি উৎপাদনের মাধ্যমে শুধু জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না, বরং এটি স্থানীয় অর্থনীতির উন্নতিতেও ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় চাষিরা এখন আরও বেশি শুটকি উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছেন, যা তাদের আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করছে।
এ প্রক্রিয়াটি সফল হলে, এটি শুধু বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্যই একটি উদাহরণ হতে পারে, বরং আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশে উৎপাদিত স্বাস্থ্যসম্মত শুটকি মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে এবং দেশের শুঁটকি শিল্পকে নতুন দিগন্তে পৌঁছানোর সুযোগ পাবে।