
সাম্মাম চাষে উপকূলের কৃষকদের বাজিমাত
উপকূলীয় এলাকায় পতিত জমিতে এতো দিন মিষ্টি আলু, খেসারি ডাল, শসা চাষ হতো। পরবর্তীতে তরমুজ চাষ শুরু হয়। তবে এখন এ শস্যগুলোর পাশাপাশি সাম্মাম চাষেও আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। বাঙ্গি স্বাদের এ সাম্মাম এখন স্থানীয় কৃষকদের লাভজনক একটি ফসল। অন্য দিকে সাধারণ ক্রেতা ও পর্যটকদের ব্যাপক আগ্রহ এ পণ্য কেনার ব্যাপারে।
এবছর সাম্মাম চাষে সফলতা পেয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। আগের তুলনায় বেড়েছে সাম্মামের ফলন। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রায় দ্বিগুণ জমিতে সাম্মাম আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। এতে খুশি ও আশানুরূপ লাভবান হবেন বলে মনে করছেন কৃষকেরা। প্রতিদিন এ-উপজেলার একাধিক পর্যটন স্পটে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। সেই দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে স্থানীয় সাম্মাম এর চাহিদা ব্যাপক।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্র জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ৭/৮ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ করা হয়। এবং চলতি মৌসুমে ৮২০ হেক্টর জমিতে সাম্মাম চাষ করা হয়েছে। উপজেলার উপকূল ও নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা ফরাস, মিষ্টি লাউ, সীম, শসার পাশাপাশি সাম্মাম ও তরমুজ চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নেই এবার কম বেশি সাম্মাম ও তরমুজ চাষ করা হয়েছে। আগাম রোপণ ও রোগ বালাই কম হওয়াতে বাম্পার ফলন হয়েছে সাম্মাম এর।
এদিকে, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রির জন্য উঠছে সাম্মাম। আকার ভেদে বিভিন্ন দামে ক্রয় করছেন ক্রেতারা। বড় সাম্মাম এর মূল্য ধরা হয়েছে ১০০/১৩০ টাকা পর্যন্ত (প্রতি কেজি)। তবে ছোট সাম্মাম প্রতি কেজি পাওয়া যায় ৭০/৮০ টাকার মধ্যে। বিক্রেতারা জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সাম্মাম বিক্রি করছেন তারা। বেচাকেনাও ভালো।
হালিমচর এলাকার কৃষক রাকিব মিয়া বলেন, ‘আমি আগে শুধু তরমুজ চাষ করতাম। এ বছর তরমুজ চাষের পাশাপাশি সাম্মাম চাষ করেছি। প্রথম পর্যায়ে আড়াই লাখ টাকার তরমুজ ও তিন লাখ টাকার সাম্মাম বিক্রি করেছি। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা লাভ হয়েছে। েেত থাকা অবশিষ্ট তরমুজ ও সাম্মাম থেকে আরো লাধিক টাকা উপার্জন হবে বলে আশাবাদী।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তরমুজ এবং সাম্মাম দুটোই লাভজনক ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকার তরমুজ এবং তিন থেকে ছয় লাখ টাকার সাম্মাম বিক্রি করা যায়। কৃষকরা লাভবান হওয়াতে তরমুজ ও সাম্মাম চাষাবাদে ঝুঁকছে।