জুলাইয়ের আগুনঝরা দিন: এক বছর পরও ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায় শহীদ পরিবারগুলো

জুলাইয়ের আগুনঝরা দিন: এক বছর পরও ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায় শহীদ পরিবারগুলো

ঢাকা, ০৫ আগস্ট ২০২৫:

গত বছর (২০২৪) জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ হারিয়েছিলেন, সেই শহীদ পরিবারগুলো আজও ন্যায়বিচারের আশায় বুক বেঁধে আছে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও স্বজন হারানোর গভীর ক্ষত নিয়ে তারা তাকিয়ে আছে, কখন তাদের প্রিয়জনদের হত্যাকারীদের বিচার হবে।

গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হয়ে জনরোষের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটে। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে অসংখ্য প্রাণ ঝরে যায়, যাদের অনেকেই ছিলেন তরুণ শিক্ষার্থী। এই শহীদদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি এবং তাদের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন মহল থেকে জোরালো দাবি উঠেছে।

শহীদ পরিবারগুলোর অভিযোগ, সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীলতা দেখাচ্ছে না। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই ফাউন্ডেশন গঠন এবং আহতদের চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছিল, অনেকেই অভিযোগ করছেন সেই প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি পূরণ হয়নি। অনেক পরিবার সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং অনেকে এখনও তাদের স্বজনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় আছে। কিছু শহীদ পরিবারের নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

মঙ্গলবার (০৫ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবার ও আহতরা তাদের আক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ এলেও, তারা নিজেরা অবহেলিত। তারা জুলাই আন্দোলনে জড়িতদের জন্য দ্রুত বিচার এবং আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের পুনর্বাসনের দাবি জানান।

বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণসহ অন্যান্য দল শহীদ পরিবারগুলোর পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই দিনটিকে সাধারণ ছুটি হিসেবে পালন করা হচ্ছে। যদিও সরকার ‘জুলাই ঘোষণা’ প্রকাশের কথা জানিয়েছে, শহীদ পরিবারগুলোর প্রধান দাবি রয়ে গেছে তাদের স্বজনদের হত্যাকারীদের বিচার ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।

শহীদ পরিবারগুলোর এই এক বছর দীর্ঘ অপেক্ষা কবে শেষ হবে, এবং তারা কখন ন্যায়বিচার পাবে, সেদিকেই তাকিয়ে আছে সারা দেশের মানুষ।

CATEGORIES
TAGS
Share This