
ইউক্রেন–রাশিয়া উত্তেজনা চরমে: নতুন নিষেধাজ্ঞার পূর্বে কূটনৈতিক আলোচনা জোরদার
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা দ্বন্দ্ব নতুন করে উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সীমান্ত অঞ্চলে সামরিক তৎপরতা বেড়ে গেছে এবং উভয়পক্ষের মধ্যে বাকযুদ্ধ ও পাল্টা অভিযোগের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, যার মধ্যে যদি রাশিয়া তার আগ্রাসী নীতি থেকে সরে না আসে, তবে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
এই সময়সীমার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের একটি কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল মস্কো সফরে গিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো— আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং সম্ভাব্য সংঘাত এড়ানো। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, রাশিয়া যদি ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন কমিয়ে না আনে এবং সামরিক আগ্রাসন বন্ধ না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তেল, গ্যাস এবং আর্থিক খাতে নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

অন্যদিকে, ইউক্রেন দাবি করেছে, রাশিয়া পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাস ও খারকিভ অঞ্চলে হামলা জোরদার করছে এবং সীমান্তে প্রায় এক লাখ সৈন্য মোতায়েন রেখেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভাষণে বলেন, “আমরা শান্তি চাই, তবে মাথা নত করে নয়। আমাদের ভূখণ্ড ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নেই।”
আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং নেটো এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে, চীন, তুরস্ক ও ভারতের মতো কিছু দেশ নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ আরও তীব্র হলে এর প্রভাব শুধু ইউরোপ নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে পড়তে পারে। তাই বর্তমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নির্ভর করছে উভয়পক্ষের সদিচ্ছা ও সমঝোতার ওপর।