
পাকিস্তানে টানা বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় দুই দিনে প্রাণ গেল ৩২ জনের
পাকিস্তানের চারটি প্রদেশে টানা ভারী বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় গত দুই দিনে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) এবং স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ডন।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৭ জুন) ১৭ জন এবং শনিবার (২৮ জুন) আরও ২ জন মারা গেছেন। চারসাদ্দায় একজন পানিতে ডুবে মারা যান এবং শাঙ্গলায় ভূমিধসে এক নারী নিহত হন। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (PDMA) জানিয়েছে, এ অঞ্চলে ৫৬টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৬টি পুরোপুরি ধসে পড়েছে।
পাঞ্জাব প্রদেশেও বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে। ছাদ ধসে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু। লাহোরে এক ঘটনায় দুই শিশু নিহত ও চারজন আহত হন। আটক, ফয়সালাবাদ, গুজরানওয়ালা, শেখুপুরা, ওকারা ও হাফিজাবাদসহ বিভিন্ন জেলায় ছাদ ধস ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
বেলুচিস্তানের ঝোব জেলায় আকস্মিক বন্যায় একই পরিবারের চারজন (তিন নারী ও এক শিশু) প্রাণ হারান। তারা কোয়েটা থেকে মুলতান যাওয়ার পথে সালিয়াজা এলাকায় বিশ্রাম নেন, তখন পাহাড়ি ঢলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকারীরা আরও দুজনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন।
সিন্ধু প্রদেশের করাচিতে শনিবার ছাদ ধস ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে পৃথক ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। লিয়ারিতে ছাদ ধসে দুইজন এবং অন্যত্র বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আরও দুইজন প্রাণ হারান।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে, আগামী কয়েকদিন ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। বৃষ্টি এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে খাইবার পাখতুনখোয়া, গিলগিট-বালটিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরের কিছু এলাকায় হিমবাহ হ্রদ বিস্ফোরণ (GLOF) ও আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে। এতে সড়ক ও অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
NDMA পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান, সিন্ধু, আজাদ কাশ্মীর ও গিলগিট-বালটিস্তানের স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার এবং জরুরি প্রস্তুতি জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে।