‘আত্মসমর্পণ নয়, যুদ্ধবিরতি চাই’—ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের জবাব

‘আত্মসমর্পণ নয়, যুদ্ধবিরতি চাই’—ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের জবাব

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের শর্তে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মিশরের মধ্যস্থতায় দেওয়া এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস, বলছে—ইসরায়েলের মূল উদ্দেশ্য যুদ্ধ থামানো নয়, বরং ফিলিস্তিনিদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামাসের কাছে মিশর নতুন একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পৌঁছে দেয়। তবে প্রস্তাবে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণের শর্ত থাকায় গোষ্ঠীটি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি আল জাজিরাকে বলেন, “আমাদের প্রতিনিধি দল প্রস্তাবটি পেয়ে বিস্মিত হয়েছে। এতে স্পষ্টভাবে প্রতিরোধ আন্দোলনকে নিরস্ত্রীকরণের কথা বলা হয়েছে, যা আমাদের জন্য সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—যেকোনো চুক্তির ভিত্তি হতে হবে গাজায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে পূর্ণ প্রত্যাহার। অস্ত্র সমর্পণের কোনো আলোচনা আমরা করব না, এমন প্রস্তাব শুনতেও আমরা রাজি নই।”

অন্যদিকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাসকে পরাজিত করা ছাড়া যুদ্ধ থামবে না। তারা বলছে, যুদ্ধ শেষ করতে হলে হামাসকে অস্ত্র নামিয়ে রাখতে হবে এবং গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ভেঙে দিতে হবে।

এদিকে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) খান ইউনিস, শুজাইয়া ও তুফাহ এলাকায় বোমা হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

শুধু গাজা নয়, দখলদার বাহিনীর অভিযান চলছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরেও। তুলকারেম শহরে একাধিক বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে একটি ক্যাফেতে বোমা ফেলা হয়। নুর শামস শরণার্থী শিবির থেকেও জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে অনেক বাসিন্দাকে।

ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী একে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।

চলমান সংঘাত ও কূটনৈতিক অচলাবস্থার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর শান্তিপ্রক্রিয়ার আভাস পাওয়া যায়নি।

CATEGORIES
TAGS
Share This