ইউরোপের পথে যাওয়ার সময় আটলান্টিক মহাসাগরে নৌকা ডুবে ৫০ পাকিস্তানি অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু
আটলান্টিক মহাসাগরে অবৈধভাবে ইউরোপের পথে যাওয়ার সময় একটি নৌকা ডুবে ৫০ পাকিস্তানি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় চরম শোকের ছায়া নেমে এসেছে পাকিস্তানে। জানা গেছে, ৮৬ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাটি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মৌরিতানিয়া থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু ১৩ দিনের দীর্ঘ যাত্রার পর নৌকাটি সমুদ্রে ডুবে যায়। ১৩ দিন ধরে সমুদ্রে ভেসে থাকার পর, মরক্কোর কর্তৃপক্ষ ৩৬ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম “ডন নিউজ” জানায়, নৌকাটি পশ্চিম সাহারা অঞ্চলের বিতর্কিত উপকূলে ডুবে গেলে অন্তত ৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়। পাকিস্তান পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্ববর্তী টুইটার) এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং মরক্কোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ৮০ জনের মধ্যে একসময় ৫০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেলেও উদ্ধারকৃতদের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং নিহতদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দাখলায় একটি দল পাঠানো হয়েছে।
এই দুর্ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, তাদের প্রিয়জনেরা কঠোর নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা দাবি করছেন, নিহতদের মধ্যে যারা বেঁচে ছিলেন, তারা মারাত্মক অবস্থায় ছিল এবং অনেকেই শারীরিক নির্যাতন ও অনাহারে মারা গেছেন।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার সুরক্ষায় আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এ দুর্ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে, অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার জন্য রক্তাক্ত পথে জীবন বিপন্ন করার প্রবণতা পৃথিবীজুড়ে অব্যাহত রয়েছে, যা গভীর মানবিক সংকটের সৃষ্টি করছে।